ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে সীমান্তবর্তী ডাংধরা ইউনিয়নের জিঞ্জিরাম নদী ও লোকায় ঝোরার পানি বৃদ্ধি পেয়ে তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এতে ইউনিয়নের পাথরের চর গ্রামের ১৬টি বাড়ি লোকায় ঝোরার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিলীন হয়েছে কয়েক হেক্টর ফসলি জমি। দিশাহারা হয়ে পড়েছেন এলাকার মানুষ।
গত শুক্রবার থেকে রোববার (৬ অক্টোবর) পর্যন্ত এ অবস্থা চলমান আছে।
পাথরের চরের আম্বিয়া খাতুন বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমরা এই ঝোরার পারে বসবাস করে আসছি। টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হলেই লোকায় ঝোরা বছরে দুই থেকে তিনবার তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। প্রতিবছর একটু একটু করে ভাঙতে ভাঙতে আমাদের বসত বাড়ির সবটুকু জমি লোকায় ঝোরায় বিলীন হয়ে গেছে। গত তিন দিনের টানা ভারি বর্ষণে পাহাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আমাদের বসবাসের জায়গাটুকু ঝোরার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের আর অন্য কোথাও বসতবাড়ি গড়ার জায়গা নেই। বর্তমানে তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে রাস্তায় মানবতার জীবনযাপন করছি।
একই গ্রামের শুকুর আলী বলেন, এই বসতভিটা ছাড়া আমার অন্য কোথাও আর মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। গত তিন দিনের পাহাড়ি ঢলে শেষ সম্বল বাড়ির ভিটাটুকু ঝোরার গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় এখন রাস্তায় ছেলেমেয়ে নিয়ে মানবতার জীবনযাপন করছি। এখন পর্যন্ত আমরা সরকারি কোনো সহায়তা পাইনি। প্রশাসনের নিকট ত্রাণ নয়, দীর্ঘস্থায়ী সমাধান চাই।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছর এভাবে ঝোরা ভেঙে ঝোরার পাড়ের মানুষগুলোর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘস্থায়ী সমাধান না হলে, পাথরের চর গ্রামের শত শত মানুষের বাড়িঘরের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। এ ছাড়াও নদীভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে পাথরের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাথরের চর বিজিবি ক্যাম্প, মসজিদসহ অনেক স্থাপনা। নদীভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স জানান, পাথরের চর ঝোরায় বাড়িঘর বিলীন হওয়ার জায়গা সরেজমিনে ঘুরে দেখে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তথ্য পাঠিয়েছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।