বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি রেট কেনো বাড়ানো হচ্ছে তার ব্যাখ্যা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সিএফএ সোসাইটি বাংলাদেশ। পাশাপাশি মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি রেটের অংশটুকু আলাদা করে প্রকাশ করা উচিত বলেও জানিয়েছেন বক্তারা।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ইকোনমিক রিপোর্টাস ফোরামে (ইআরএফ) ‘পলিসি রিকমেন্ডেশনস অন ইকোনমি, ক্যাপিটাল মার্কেট অ্যান্ড দ্য ব্যাংকিং সেক্টর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেছেন সিএফএ সোসাইটি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আসিফ খান।
আসিফ খান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক মনিটরি পলিসির সিদ্ধান্ত বছরে ২ বার নিয়ে থাকে। তবে মনিটরি পলিসির এ সিদ্ধান্ত বছরে ৪ বার করা যেতে পারে। এছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের টাকা কোন ব্যাংকে রাখতে পারবে সেবিষয়ে একটি ন্যাশনাল পলিসি থাকা দরকার বলেও মনে করছেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে পুরোপুরি স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা দরকার। বাংলাদেশে একটি ব্যাংকে সর্বোচ্চ ২০ জন পরিচালক থাকতে পারেন, এটিয়ে কমিয়ে ১৫ জন করা যেতে পারে। একইসঙ্গে তিনজন স্বতন্ত্র পরিচালক থেকে বাড়িয়ে ৫ জন করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া বোর্ডে আমানতকারীদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি থাকা উচিত। আর একই পরিবারের সর্বোচ্চ একজন একজন পরিচালক রাখা যেতে পারে।
এদিন আলোচনা সভায় ব্যাংকের খাতের খেলাপিদের তালিকা প্রকাশের প্রস্তাব দিয়েছে সিএফএ সোসাইটি বাংলাদেশ।
এছাড়াও তিনি বলেন, অর্থ ঋণ আদালত ও দেউলিয়া আইন নিয়ে কাজ করা দরকার। একইসঙ্গে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ সংক্রান্ত বিষয়গুলোর জন্য আলাদা পলিসি থাকা প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তিনি।
সিএফএ সোসাইটি বাংলাদেশের সেক্রেটারি কাজী মনিরুল ইসলাম বলেন, ফ্লোর প্রাইস পুঁজিবাজারে অনেক বড় ক্ষতি করেছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আমাদের বাজার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারনা তৈরি হয়েছে। অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী আর কখনো বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে আসবে না। এজন্য আর কখনো যেনো পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস ফিরে না আসে।
তিনি বলেন, বন্ড মার্কেটে তারল্য নেই। এজন্য বন্ড মার্কেটে তারল্য বাড়ানোর জন্য কাজ করা উচিত। এছাড়াও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞদের কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। কারণ তাদের কথা বলার মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
মার্জিন লোনের প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে কাজ করছে না বলেও জানান কাজী মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মার্জিন লোন নিয়ে আমরা একটি বিশেষ চক্রাকারের মধ্যে পড়ে আছি। এটি সঠিকভাবে কাজ করছে না। মার্জিন লোনের রুলস এবং রেগুলেশন রিভিউ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মার্জিন লোন যারা নিয়েছে তাদের মধ্যে অধিকাংশ ক্ষতির মুখে পড়েছে। এজন্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো উচিত। তাদেরকে বোঝানো উচিত যে, মার্জিন লোন সবার জন্য না।
এছাড়াও তিনি বলেন, মার্কেট ক্যাপিটাল রেশিও বাড়াতে হবে। এজন্য ভালো কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করতে হবে। তবে ভালো কোম্পানিগুলো বিভিন্ন কারনে তালিকাভুক্ত হতে চায় না। বাজারে আসার জন্য তাদের আগ্রহী করার জন্য ট্যাক্স ইনসেনটিভ সহ আরও কিছু সুবিধা দেওয়া যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত মিউচুয়াল ফান্ড পপুলারাইজড করতে হবে। ভালো একটি মিউচুয়াল ফান্ড ইন্ডাষ্ট্রি মার্কেট স্থিতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলেও মনে করছেন তিনি।
এদিন আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের এমডি মো. মনিরুজ্জামান এবং শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের সিইও কাজী মনিরুল ইসলামসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
পর্যটন সংবাদ/