নিজেদের প্রিয় ফরম্যাটেও অস্বস্তিতে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে বাজেভাবে হারের পর সিরিজ খোয়ানোর শঙ্কা জাগছে। ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামতে যাচ্ছে টাইগাররা। সিরিজ বাঁচাতে হলে জয়ের বিকল্প নেই নাজমুল হোসেন শান্তদের। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় আজ বিকেল চারটায়।
ঘরে বাইরে সময়টা ভালো যাচ্ছিল না বাংলাদেশের। ভারতের মাটিতে হোয়াইটওয়াশের লজ্জার পর চিত্রটা বদলায়নি ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও। আফগান সিরিজ দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্য ছিল টিম টাইগার্সের।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ছোট লক্ষ্য তাড়ায় জয়ের পথেই ছিল বাংলাদেশ। ২ উইকেট হারিয়ে দলীয় শতক স্পর্শ করেছিল টাইগাররা। তবে ৩ উইকেটে ১৩১ থেকে আর ১২ রান যোগ করতেই বাকি ৭ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয় নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ৯২ রানে ম্যাচ হেরে সিরিজে পিছিয়ে আছে টাইগাররা।
এ ম্যাচের আগে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে বাংলাদেশ। কারণ সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন মুশফিকুর রহিম। আঙুলের চোটে আগামী ১ মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে।
ম্যাচের আগের দিন গতকাল গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ বলছিলেন, ‘দলের সমন্বয়ের কথা যদি বলেন দেখুন, আমাদের কিন্তু অপশনও খুব বেশি নেই। লিটন দাস অসুস্থ, সে থাকলে দলের সমন্বয়টা আরও ভালো থাকতো হয়ত। যেহেতু ওইরকম সুযোগ নেই, জাকের আলির জন্য বেস্ট অব লাক।’
উইকেটকিপার ব্যাটার হিসেবে জাকের আলি ছাড়া আর কোনো বিকল্পও নেই এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জন্য। তাকে নিয়ে মিরাজ আরো বলেন, ‘ওর জন্য ভালো একটা সুযোগ। সুযোগ আসছে, ও যদি শতভাগ দিতে পারে অবশ্যই ওর নিজের ক্যারিয়ারের জন্যও ভালো, দেশের জন্যও ভালো হবে।’
তবে এখনো সিরিজ জয়ের সুযোগ দেখছেন মিরাজ, ‘দেখুন, যেহেতু আমাদের সুযোগ আছে। একটা ম্যাচ হেরেছি, এখনও দুইটা ম্যাচ আছে। সুতরাং আমরা দুইটা ম্যাচ চিন্তা না করে পরবর্তী ম্যাচটা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু আমরা একটু ব্যাকফুটে আছি। যেহেতু আমরা একটা ম্যাচ খেলেছি এখানে, অনেক বছর পর ওয়ানডে খেলেছি। ৭-৮ মাস পর খেলেছি সবার মাঝে ওই জিনিসটাও একটু কাজ করছিল অনেকদিন পর আমরা ওয়ানডেতে খেলছে। আমরা প্রস্তুতিটা ওইভাবে নিচ্ছি, আশা করি যেহেতু অনেকদিন পর এই মাঠে খেলছি। ভালো মোমেন্টাম কিভাবে পেতে সেটার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
সিরিজের প্রথম ম্যাচ হেরে যাওয়ার পরও, আফগানিস্তানের বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। ১৭টি ম্যাচের মধ্যে ১০টিতে জয়ী এবং ৭টিতে হেরেছে টাইগাররা। গত বছরের জুলাইয়ের আফগানিস্তানের কাছে ২-১ ব্যবধানে প্রথমবারের মত ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। ওই হারের আগ পর্যন্ত দ্বিপাক্ষিক সিরিজে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত রেকর্ড ছিল টাইগারদের।
নিজেদের পছন্দের ফরম্যাটে সিরিজ হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেকটাই বাজে অধ্যায়ের সূচনা হয়। দ্বিতীয় ম্যাচে চাপে থাকবে বাংলাদেশ। কারণ এ ম্যাচও হেরে গেলে আফগানদের কাছে টানা দ্বিতীয়বারের মত সিরিজ হারবে টাইগাররা। ইতোমধ্যে দলের সাথে যোগ দিয়েছেন ভিসা জটিলতায় সফরের শুরু থেকে দলের সাথে না থাকা বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ এবং পেসার নাহিদ রানা।
ইনজুরিতে ছিটকে যাওয়া মুশফিকুরের বদলি এখনও জানায়নি বাংলাদেশ। যদিও তার জায়গায় পরিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক। ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে টাইগার একাদশে এক বা দু’টি পরিবর্তন আসতে পারে ।
বাংলাদেশ স্কোয়াড : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মেহেদি হাসান মিরাজ (সহ-অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, জাকির হাসান, মাহমুদউ ল্লাহ রিয়াদ, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি অনিক, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও নাহিদ রানা।