দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র সাজেকে চার দিন আটকে থাকার পর গতকাল খাগড়াছড়ি ফিরেছেন পর্যটকরা। পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকে ৭২ ঘণ্টার অবরোধের কারণে সাজেকে আটকে পড়েন পর্যটকরা।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার পর থেকে পর্যটকবাহী গাড়িগুলো খাগড়াছড়ি শহরে প্রবেশ করতে থাকে। সেনাবাহিনী এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের সহযোগিতায় নিরাপদে খাগড়াছড়ি পৌঁছেছেন পর্যটকরা।
আটকে পড়া পর্যটকদের জন্য খাগড়াছড়ি থেকে দিনের বেলায় গাড়ি ছাড়ার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। শ্যামলী পরিবহনসহ কয়েকটি পরিবহনে আটকে পড়া পর্যটকদের জন্য ৫০ টাকা ভাড়া ছাড় দেওয়া হয়েছে।
খাগড়াছড়ি ফিরে আসা পর্যটকরা জানিয়েছেন, গত শুক্রবার থেকেই তারা বিদ্যুৎবিহীন ছিলেন। রোববার থেকে অধিকাংশ হোটেল মোটেলের জেনারেটর সুবিধা বন্ধ হয়ে যায়। খাবার সংকট দেখা দেয়। অনেকের নগদ অর্থ সংকট ছিল। মোবাইল বন্ধ থাকায় পরিবারের সাথেও যোগাযোগ করতে পারেননি অনেকেই। সবচেয়ে বেশি গুজবের কারণে আতঙ্কিত ছিলেন পর্যটকরা।
মাদারীপুর থেকে বেড়াতে আসা এনামুল হক বলেন, সাজেকে প্রতিদিন সেনাবাহিনী-বিজিবি পাহারা দিত। হোটেল মালিকরা বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়াতেন। এতে সার্বক্ষণিক আতঙ্কিত থাকতে হতো।
কুমিল্লা থেকে সাজেক বেড়াতে আসা কাউসার আহমেদ বলেন, মনে হচ্ছে জেল খানা থেকে বের হয়ে আসছি। বিশেষভাবে সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ। সেনাবাহিনী খাবার এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে।
চট্টগ্রাম থেকে সাজেক বেড়াতে আসা পর্যটক সাবরিনা বলেন, কোনো পর্যটনকেন্দ্রে কমপক্ষে এক সপ্তাহের খাবার মজুত রাখা প্রয়োজন। সাজেকে দুই-তিন দিন না যেতেই খাবারের সংকট দেখা গেছে। এছাড়া আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে অনেক বেশি। চিন্তিত ছিলাম খাগড়াছড়ি ফিরতে পারব কিনা।
অবরোধ কার্যকর করতে পাহাড়ি ছাত্র ও স্থানীয় লোকজন মিলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে বাঘাইহাট-সাজেক জোনের বিভিন্ন স্থানে সড়কে বড় বড় গাছ ফেলেন। বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে সড়কে ফেলে দেন। সড়কে আড়াআড়িভাবে ট্রাক রেখে এবং টায়ার পুড়িয়ে রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী করে তোলা হয়। শুকনাছড়া এবং উলুছড়া এলাকায় দুটি কালভার্টের লোহার পাটাতন সরিয়ে ফেলেন। যার কারণে যান চলাচল করতে পারেনি। সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টায় ও স্থানীয়দের সহায়তায় ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ও ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে বিভিন্ন স্থানের বাধা অপসারণ করে সড়ক চলাচল উপযোগী করা হয়। পরে পর্যটকদের সাজেক থেকে খাগড়াছড়ি নিয়ে আসে সেনাবাহিনী।
পর্যটন সংবাদ/