পৃথিবীতে পানির কোনো বিকল্প নেই। হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত এই উপাদানটি প্রায় সকল প্রাণীকুলের বেঁচে থাকার জন্য জরুরি।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, জেলিফিশের দেহের ৯৫ ভাগই পানি। আর মানবদেহের ৬০ শতাংশ এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানে পূর্ণ।
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, পানি ছাড়া জীবের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। কিন্তু এক্ষেত্রে কিছু প্রাণী আছে যারা কি-না বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করে বহুদিন পানি ছাড়া বাঁচতে পারে।
ঠিক তেমনি একটি প্রাণী জল ভাল্লুক। এই ক্ষুদ্র অমেরুদণ্ডী প্রাণীটি বিশেষ পরিস্থিতিতে দেহের পানি ৯৯ শতাংশ ছেড়ে দিতে পারে। একইসাথে এমন পানিশূন্য অবস্থায় আট পায়ের আণুবীক্ষণিক প্রাণীটি তাপমাত্রা, চাপ, অক্সিজেনের অভাব মোকাবিলা করে প্রায় এক দশক সময় পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে।
বেশিরভাগ প্রাণীই দেহের পানির ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে যেসব অঞ্চলে পানির সংকট রয়েছে সেসব অঞ্চলের প্রাণীরা দেহে পানি ধরে রাখার যথাসম্ভব কৌশল রপ্ত করে। কেননা সেখানকার গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে পানির প্রাপ্তি বেশ চ্যালেঞ্জিং।
তাপমাত্রা যত বেশি হবে দেহ থেকে ঘামসহ নানা কারণে পানি বের হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি থাকে। গরমে দেহকে ঠান্ডা রাখতে মানুষেরও ঘাম বের হয়। আর এই কারণেই মরুভূমিতে একজন ব্যক্তি পানি পান না করে খুব বেশি দিন বাঁচতে পারবে না।
তবে মরুভূমির পরিবেশের সাথে অভ্যস্ত উট ঘামায় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে মানিয়ে নিতে প্রাণীটি শরীরের তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। যা সাধারণত মানুষের চেয়ে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
উটের প্রস্রাব হয় অত্যন্ত ঘন। যা দেহের পানি সংরক্ষণে বেশ কার্যকর।
শরীরের ভেতরেও উটের পানি ব্যবস্থাপনার কৌশল আছে। তার রক্তকোষগুলো যখন তুলনামূলকভাবে শুকিয়ে আসে তখন পানি সরবরাহ করে শরীরের অন্য তরল অংশ।
এছাড়াও, শরীরের মোট ওজনের ২৫ শতাংশ কমে না যাওয়া পর্যন্ত উট পানির অভাব সহ্য করে নিতে পারে। অথচ যেখানে অন্য স্তন্যপায়ীরা ১২-১৫ শতাংশ ওজন কমে গেলেই হৃৎপিণ্ড বিকল হয়ে যাবার মতো জটিলতায় পড়ে। তাই মরুভূমির জাহাজখ্যাত উট এক-দুই সপ্তাহ পানি ছাড়াই মরুভূমিতে টিকে থাকতে পারে।
আবার মরুভূমি ক্যাঙারু ইঁদুরের পানি পান অনেকটা না করলেও চলে। কেননা এটি সিড বেইজড ডায়েট থেকে বেঁচে থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পেয়ে থাকে।