ভ্রমণ ও পর্যটনের জন্য ২০২৪ সালে বিশ্বের সেরা দেশ যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) প্রকাশিত এক তালিকায় এই তথ্য উঠে এসেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক সংবাদে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
সংবাদে বলা হয়, গত মে মাসে তালিকাটি প্রকাশ করে ডব্লিউইএফ। তালিকার সেরা ১০টি দেশের মধ্যে ৬টিই ইউরোপের।
তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় অবস্থানে আছে স্পেন। জাপানের অবস্থান তৃতীয়। ফ্রান্স চতুর্থ। অস্ট্রেলিয়া আছে পঞ্চম স্থানে।
জার্মানির অবস্থান ষষ্ঠ। যুক্তরাজ্য আছে সপ্তম অবস্থানে। অষ্টম স্থানে রয়েছে চীনের নাম। ইতালির অবস্থান নবম। আর ১০ম স্থানে আছে সুইজারল্যান্ড।
তালিকাটি করার ক্ষেত্রে অবকাঠামো, প্রাকৃতিক সম্পদ, টেকসই, সাশ্রয়ী, শ্রমিকের প্রাপ্যতাসহ কয়েকটি মানদণ্ডকে বিবেচনায় নেওয়া হয়।
এ ছাড়া হোটেলগুলোর ব্যবসা, বিমানবন্দর, আকর্ষণের জায়গা, উড়োজাহাজ সংস্থা—এসব বিষয়ও বিবেচিত হয়।
প্রতিবেদনে ইউরোপ মহাদেশকে আন্ত–আঞ্চলিক ভ্রমণপ্রবাহ–সমৃদ্ধ একটি প্রাণোচ্ছল গন্তব্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এর কারণ হিসেবে সেখানকার ট্রেন যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়া, দৃঢ় অর্থনীতি, ইউরো ও পাউন্ডের শক্তিশালী অবস্থাকে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরেকটি কারণ হলো, শক্তিশালী পাসপোর্ট।
বিশ্বের শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকায় ইউরোপের অনেক দেশের নাম রয়েছে। প্রতিবছর বিশ্বের শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকা প্রকাশ করে হ্যানলি সূচক (ইনডেক্স)। সূচকে ২০২৪ সালে ছয়টি দেশ যৌথভাবে প্রথম স্থানে উঠে এসেছে। এগুলো হলো ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, সিঙ্গাপুর ও স্পেন। এর মধ্যে সিঙ্গাপুর বাদে অপর পাঁচটি দেশের নাম ডব্লিউইএফ প্রকাশিত ভ্রমণের জন্য সেরা ১০ দেশের তালিকায় আছে। ভ্রমণের দিক থেকে সিঙ্গাপুরের অবস্থান ১৩তম।
করোনা মহামারি চলাকালে বিশ্বের অনেক দেশ কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। নিজেদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল।
করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিল করা হয়। তবে অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এশিয়ার পর্যটনশিল্প–সমৃদ্ধ দেশগুলোতে ভ্রমণনিষেধাজ্ঞা দেরিতে প্রত্যাহার হয়। তবে এখন এই সমস্যা না থাকায় গত কয়েক বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে বিশ্বের পর্যটন খাতে বেশি প্রবৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে।
জাপানের ক্ষেত্রে কথাটি সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। ভ্রমণের জন্য সেরা দেশের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে থাকা জাপানে করোনা-পরবর্তী সময়ে পর্যটন খাত সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিল উভয় মাসে ৩০ লাখের বেশি (প্রতি মাসে) বিদেশি পর্যটক জাপানে ভ্রমণ করেছেন।
সেরা ১০ দেশের তালিকায় অষ্টম স্থানে থাকা চীন পর্যটকদের ভ্রমণ প্রক্রিয়া সহজ করতে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। গত মার্চ মাসে আয়ারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসসহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের বাসিন্দাদের জন্য ভিসার বাধ্যবাধকতা তুলে দিয়েছে দেশটি।
মার্কিন নাগরিকদের জন্যও চীন ভ্রমণ আগের থেকে অনেক সহজ করা হয়েছে। ভ্রমণ ভিসা পেতে তাদের এখন আর ভ্রমণবৃত্তান্ত কিংবা হোটেল বুকিংয়ের প্রমাণ দিতে হয় না।
সেরা ১০ দেশের তালিকায় স্থান পাওয়া উত্তর আমেরিকা মহাদেশের একমাত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র। অল্পের জন্য সেরা দশে ঢুকতে পারেনি প্রতিবেশী দেশ কানাডা। তালিকায় দেশটি ১১তম স্থানে আছে।
ডব্লিউইএফ যুক্তরাষ্ট্রকে ‘পরিণত’ পর্যটন বাজার হিসেবে অভিহিত করেছে। এর মানে হলো, ভ্রমণকারীদের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো দেশটিতে আছে। যেমন বিভিন্ন শহরের মধ্যে আকাশপথে যোগাযোগের ব্যবস্থা, পর্যটনস্থলে ট্যুর গাইড, ভাড়া করা গাড়ি, হোটেল কক্ষ, মানচিত্রের মতো প্রয়োজনীয় সেবা।
পর্যটন সংবাদ/