সামপ্রতিক সহিংসতার কারণে খাগড়াছড়ির পর্যটনে বড় ধাক্কা লেগেছে। ১৯ সেপ্টেম্বরের পর থেকে খাগড়াছড়িতে কোনো পর্যটক আসেনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পর্যটন খাতে অচলাবস্থা কাটবে না বলে মত পর্যটন ব্যবসায়ীদের।
সারা বছর পর্যটকে মুখরিত থাকলেও বর্তমানে পর্যটক শূন্য খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ির প্রধান পর্যটন কেন্দ্র আলুটিলা, রিসাং ঝরণা, জেলা পরিষদ পার্কসহ প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে কোনো পর্যটক নেই।
সামপ্রতিক সময়ে দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি সদর ও রাঙামাটিতে চলা সহিংসতা এবং পরবর্তী অস্থিরতার কারণে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে। খাগড়াছড়ির প্রধান পর্যটনের কেন্দ্র আলুটিলা সবসময় পর্যটকে মুখরিত থাকে অথচ এখন ভিন্ন চিত্র। সুনসান নীরবতা।
আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের টিকেট কাউন্টারে দায়িত্বরত কোকোনাথ ত্রিপুরা ও গেইটম্যান রতন ত্রিপুরা বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে আলুটিলায় ৫শ থেকে ৬ শ দর্শনার্থী আসেন। ছুটির দিনে প্রায় ১ হাজারের বেশি দর্শনার্থী থাকেন। অথচ এখন কেউ নেই।
সাজেকে পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে তার প্রভাব এখানেও পড়েছে। সরকারি রাজস্ব আদায় প্রায় শূন্যের কোটায়।
আলুটিলা কফি হাউস এন্ড রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক মো. মামুন বলেন, ‘আমাদের এখানে কোনো পর্যটক নেই। সামনে টানা তিন দিন পূজার বন্ধ। কিন্তু এখন যা অস্থিরতা সেটা না কাটলে পর্যটক সমাগম হবে বলে মনে হয় না। আমাদের প্রতিদিনই আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।’
চলতি বছর জুলাই মাসজুড়ে চলা ছাত্র আন্দোলন আগস্টে সরকার পতনকে কেন্দ্র করে প্রায় দুই মাস পাহাড়ে পর্যটনে ভাটা পড়েছিল। সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় পাহাড়ে পর্যটক সমাগম বাড়ছিল। ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মোটর সাইকেল চুরির অভিযোগে মামুন হত্যাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে সামপ্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয় যা রাঙামাটিতেও ছড়িয়ে পড়ে।
সহিংসতা ও হামলার প্রতিবাদে ২১ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর তিন দিনের অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ি ও সাজেকে পর্যটকরা আটকা পড়েন। ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে সাজেকে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। এতে খাগড়াছড়িও প্রায় পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে। মূলত সেই থেকে খাগড়াছড়ির পর্যটনে খরা শুরু হয়। যা এখনো চলমান।
এছাড়া ধর্ষণের অভিযোগে মঙ্গলবার পিটিয়ে শিক্ষক হত্যার ঘটনায় খাগড়াছড়িতে নতুন করে সহিংসতা হয়েছে। এতে মানুষের মধ্যে ভয় ও আতংক বেড়েছে।
পর্যটন সংবাদ/