চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশের রাজস্ব আদায় প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা কম হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ অবস্থার উন্নতি হওয়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। বিশ্বব্যাপী সংস্থাগুলোও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা এ ধীরগতির কারণ হিসেবে সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলন, শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং এর পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে দায়ী করেছেন। প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২৫ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা কম হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা কম।
বিশ্বব্যাংকও পূর্বে ৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিলেও তা এখন ৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছে, যা মহামারির বছরের কাছাকাছি।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং রাজস্ব আদায়ের মধ্যে গভীর সম্পর্ক থাকায় অর্থনীতি স্থিতিশীল হতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম প্রান্তিকে জুলাই মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২০ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা, আগস্টে ২১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং সেপ্টেম্বরে ২৯ হাজার কোটি টাকা।
এনবিআরের তথ্যে আরও দেখা গেছে, আমদানি শুল্ক এবং মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আদায় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ৭ শতাংশ এবং ১০ শতাংশ কমে গেছে। তবে, একই সময়ে আয়কর আদায় আমদানি শুল্ক এবং ভ্যাটের চেয়ে ভালো হয়েছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সত্ত্বেও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে রাজস্ব আদায় বাড়ার কথা ছিল।
বিশেষজ্ঞরা আমদানি কমে আসাকেও রাজস্ব ঘাটতির একটি বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম দুই মাসে আমদানি পরিশোধ (এলসি নিষ্পত্তি) গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি কমে গেছে।
এনবিআর প্রথম প্রান্তিকে ৭০ হাজার ৯০৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে, যা ৯৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেক কম। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি ৬ শতাংশ কম, যা দেশের রাজস্ব পরিস্থিতির চলমান চ্যালেঞ্জগুলোকে তুলে ধরে।