দিল্লির তিলক নগরের বাসিন্দা মনোজ মঙ্গা পেশায় একজন ব্যানার নির্মাতা। একসময় সাধারণ জীবনযাপন ছেড়ে তিনি জড়িয়ে পড়েন অবৈধ কার্যকলাপে। জাল ভিসা তৈরির মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন প্রায় ১০০ কোটি রুপি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি; সম্প্রতি তাঁকে আটক করেছে পুলিশ।
ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যানার নির্মাতা থেকে মনোজ মঙ্গার জাল ভিসার সাম্রাজ্য গড়ার যাত্রা শুরু হয়েছিল তিলক নগর থেকেই। সাধারণ এক দরজার পেছনে বসে চলছিল তাঁর অসাধারণ জালিয়াতি কার্যক্রম। ফটোশপ ও কোরেল সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের ভিসার টেমপ্লেট তৈরি ও সংরক্ষণ করতেন তিনি। পুলিশ জানায়, গ্রাফিক ডিজাইনের ওপর তিনি একটি কোর্স করে জাল ভিসা তৈরির পদ্ধতি আয়ত্ত করেন।
মনোজ মঙ্গার এই অপরাধমূলক যাত্রা শুরু হয় যখন ব্যানার তৈরির সময় কিছু মানুষ তাঁকে ভিসাপ্রতি এক লাখ রুপি আয়ের পথ দেখান। ব্যানার তৈরি থেকে তিনি মাত্র পাঁচ হাজার রুপি উপার্জন করতেন। দ্রুত টাকা আয়ের এই লোভই মঙ্গাকে পতনের দিকে নিয়ে যায়।
বেশ সাধারণ জীবনযাপন করতেন মনোজ মঙ্গা। পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা মদন লাল জানান, মঙ্গার দুই সন্তান রয়েছে। তাঁদের একজন দিল্লিতে এবং অন্যজন জার্মানিতে পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর বাড়িটি ছিল অবৈধ কার্যকলাপের কেন্দ্রস্থল। যেখানে শত শত স্ট্যাম্প ও অপরাধ পরিচালনার জন্য নানা ধরনের কাগজপত্র ছিল।
মনোজ মঙ্গা প্রতি মাসে ২০ থেকে ৩০টি জাল ভিসা তৈরি করতেন এবং প্রতিটি ভিসার দাম নির্ধারণ করতেন গ্রাহকের ওই ভিসা কত জরুরি দরকার ও তা পাওয়ার জন্য তিনি কতটা আগ্রহী, তার ওপর ভিত্তি করে। ১৫ দিনের তদন্তের পর মনোজ মঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তিনি শুধু একটি ফোন ব্যবহার করতেন। ব্যবহারের পর তিনি দ্রুতই ফোনটি বন্ধ করে দিতেন, যাতে পুলিশ কল ট্রেস করতে না পারে।
শেষ পর্যন্ত মনোজ মঙ্গার পতন ঘটে যখন তাঁর এক সহযোগী পুলিশের নির্দেশমতো তাঁকে একটি জাল ভিসা তৈরি করে দিতে অনুরোধ জানান। পরে তাঁর বাসায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ কার্যকলাপের পরিধি উন্মোচিত করা হয়।
পর্যটন সংবাদ/