নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ে ঈদুল আজহার পরও রয়ে গেছে শক্তিশালী গতি। চলতি জুন মাসের প্রথম ২১ দিনেই প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন প্রায় ২০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স, যার মাধ্যমে ইতিহাসে প্রথমবার এক অর্থবছরে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছাড়িয়েছে ২৯ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বৈধ পথে অর্থ পাঠানোর প্রতি আগ্রহ বাড়ায় রেমিট্যান্সে এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডলারের উচ্চমূল্য, হুন্ডির প্রতি নিরুৎসাহ, এবং অর্থ পাচার কমে যাওয়ার প্রভাবেই এই রেকর্ড গঠন সম্ভব হয়েছে।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৯৪৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলার, অর্থাৎ ২৯ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার। এটি দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রাপ্তির রেকর্ড। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার এসেছিল।
ঈদকে ঘিরে রেমিট্যান্সের বড় উল্লম্ফন
মে মাসে এসেছে ২৯৭ কোটি ডলার, যা একক মাস হিসেবে দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। আর মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেকর্ড তৈরি হয়েছিল।
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রেমিট্যান্সে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আরও স্পষ্ট হয়েছে। আগস্টে ২২২ কোটি ডলার থেকে শুরু করে ডিসেম্বরে ২৬৩ কোটি ডলার এবং চলতি বছরের মার্চে রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলার এসেছে। ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকা এ আয়ের প্রবাহে অর্থনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে স্বস্তি।
রিজার্ভেও ইতিবাচক ধারা
প্রবাসী আয়ের শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ফিরে পেয়েছে চাঙা ভাব। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে, গ্রস রিজার্ভ ২১ জুনে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে, যা ১৫ জুনে ছিল ২০ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার। পাশাপাশি মোট রিজার্ভ বেড়ে হয়েছে ২৬ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার।
বিশ্লেষকদের মতে, এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে দেশের অর্থনীতি আরও স্থিতিশীল হবে এবং বিনিয়োগসহ ভ্রমণবান্ধব অবকাঠামো ও কর্মসংস্থানেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।