সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্টে (সিজেডএম) দান বা অনুদান দিলে তা আয়করমুক্ত থাকবে। ২০২৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এই কর অব্যাহতি সুবিধা বহাল থাকবে।
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে।
জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারণে সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্টকে এনবিআর এই বিশেষ সুবিধা দিয়েছে। ২০২৩ সালের আয়কর আইনের ৭৬ নম্বর ধারার ১ উপধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এনবিআর এই আদেশ দিয়েছে। আদেশ সই করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
এই আদেশের অর্থ হলো, কোনো করদাতা যদি সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্টকে কোনো অর্থ দান বা অনুদান দেন, তাহলে তিনি বছর শেষে রিটার্ন দেওয়ার সময় ওই অর্থ করমুক্ত আয় হিসেবে দেখাবেন। এই অর্থের ওপর কোনো আয়কর বসবে না।
সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্টের ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি সাত ধরনের জনকল্যাণমূলক কাজ করে। যেমন বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাৎক্ষণিক সহায়তা; জীবিকা উন্নয়ন কর্মসূচি; গরিব তরুণ গোষ্ঠীর জন্য ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান (নৈপুণ্য বিকাশ); বিপদগ্রস্ত নারী ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা (ফেরদৌসী); পিছিয়ে পড়া শিশুদের জন্য শিক্ষা ও পুষ্টি কর্মসূচি (গুলবাগিচা); শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান (জিনিয়াস) এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি (দাওয়া)।
এই প্রতিষ্ঠানটির উপদেষ্টা পর্ষদে খ্যাতনামা ব্যক্তিরা রয়েছেন। এই তালিকায় আছেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ (বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির উপদেষ্টা পর্ষদে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন), সাবেক মন্ত্রী এম নুরুউদ্দিন খান; জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান, এ কে খান ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি সচিব সালাউদ্দিন কাশেম খান প্রমুখ। রহিমআফরোজ বাংলাদেশ লিমিটেডের গ্রুপ পরিচালক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নিয়াজ রহিম প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
কোনো প্রতিষ্ঠান বা খাতে দান করলেই কর অব্যাহতি সুবিধা মেলে না। এ জন্য সরকার কিছু খাত নির্ধারণ করে দেয়। আগে থেকেই যেসব খাতের দান আয়করমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলো হলো জাকাত তহবিল, জাতির জনকের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে অনুদান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক অনুমোদিত দাতব্য হাসপাতাল, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে স্থাপিত প্রতিষ্ঠান, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক, আহ্ছানিয়া ক্যানসার হাসপাতাল, আইসিডিডিআরবি, সিআরপি, সরকার অনুমোদিত জনকল্যাণমূলক বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন ক্যানসার হাসপাতাল ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান।