কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন। একদিন আগে পুরান ঢাকার দুই কলেজের সংঘর্ষে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ধংস্বস্তুপে পরিণত হয় কলেজগুলো।এসব কিছুর প্রভাব পড়েছে রাজধানীবাসীর জনজীবনেও! এ নিয়ে ক্ষুব্ধ অনেকেই। এবার এসব বিষয় নিয়ে সরব নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।
কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের অবস্থান নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাতে নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লাইভে এসে বলেন, ‘মানুষ জানতে পারছে ছাত্ররাও জানতে পারছে; কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কেন সমস্ত বিষয়গুলো আগে থেকে জানতে পারছে না? সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে এ জিনিসগুলো কেন থামানো হচ্ছে না? আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তো দেখছি ছাত্রদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ দাঁড়িয়ে দেখেন, এটা হলে কীভাবে? এভাবে তো এটা বন্ধ করা যাবে না।
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা তো শুরু থেকেই বলে আসছি, এই সরকারকে ফেল করানো যাবে না। এই সরকার ফেল মানে আমাদেরও ফেল। আমাদের স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে। এতো রক্ত, বহু মানুষ এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এসবই তো বৃথা যাবে যদি সরকার ফেল করে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের এক কলেজ থেকে আরেক কলেজে গিয়ে মারামারির যে ঘটনা ঘটল, যে উল্লাস এক পক্ষের ছাত্রদের দেখেছি, ভাঙচুর করে যে মজা পাচ্ছে- এটাতো দেখি একটা খেলা মনে করছে ওরা। এদেরকে যদি কড়া শাসন না করা হয় তাহলে তো থামবে না।’
সরকারের উদ্দেশে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘যারা অযোগ্য আছে, তাদের সরিয়ে দেওয়াই হবে উচিত সিদ্ধান্ত। তাদের বদলে নতুন লোক নেন। দুই সমন্বয়ক যারা উপদেষ্টা হিসেবে আছেন, তারাই তো সব ঠিকঠাক করছেন। তারা তো ঘুমাতেও পারছেন না। সব কাজ তো তাদেরকেই করতে দেখি, বাকিরা কই? তাদের তো কোনো কথাই দেখি না।’
এ সময় হতাশা প্রকাশ করে দেশবাসীর উদ্দেশে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আমার দেশ এবং দেশের মানুষ, আপনাদের নিয়ে আমি খুবই চিন্তিত। আপনারা জানেন, নিজের জন্য কিছু আমি বলি না। জীবনে দেশ ছেড়ে গেলাম না কোথাও। ৩২ বছর ধরে একটা মুভমেন্ট নিয়ে আপনাদের সঙ্গে আছি, সেই জায়গাটাতেও এখনো কিছু করতে পারলাম না। সেখানেও কোনো রিফর্ম নাই, কিচ্ছু নাই। চাঁদাবাজি তো আগের মতোই চলছে, অনিয়ম হচ্ছে- সবকিছুই হচ্ছে।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এই যে ব্যাটারিচালিত রিকশাওয়ালারা দেখেন এখন কী বলছে! মনে হচ্ছে, সবাই এখন দেশটারে খুবলে খাবে। কারও কোনো ধরনের দরদ আমি দেশের প্রতি দেখি না। দেশটা চলবে কীভাবে, আমি তো এটা বুঝতেছি না।’